টেকনোলজি
কম্পিউটার ভাইরাস কি

কম্পিউটার ভাইরাস কি
কম্পিউটার ভাইরাস কি
কম্পিউটার ভাইরাস হচ্ছে একটি ক্ষতিকারক জিনিস যা ধরা যায় না বা দেখা যায় না। সাধারনত আমরা ভাইরাস বলতে বুঝি মানুষের শরীরকে রোগে আক্রান্তকারী ভাইরাস বা কোন প্রকার রোগ। কিন্তু, মানুষের শরীরের ভাইরাস এর কম্পিউটার ভাইরাস এক নয়। দুই ভাইরাসই সম্পূর্ণ রূপে ভিন্ন। মানবদেহে রোগ সৃষ্টকারী ভাইরাস হচ্ছে যা মানবদেহ বা প্রানী দেহকে বা স্বাস্থ্যকে ক্ষতি করে থাকে। আর কম্পিউটার ভাইরাস হচ্ছে যা কম্পিউটারের ডাটাবেস বা তথ্যকে বা কম্পিউটার সিস্টেমকে ক্ষতির মুখে ফেলে দেয়। যার ফলে সেই ভাইরাসে আক্রান্ত কম্পিউটারের সকল তথ্য ডিলিট হয়ে যায় বা সব তথ্য অন্য একজন অচেনা বাক্তির কাছে পোঁছে যায়। যার ফলে জরুরি তথ্য থাকায় সেগুলো আপনার হুমকির মধ্যে পরে যায়।মানব শরীরে সৃষ্ট ভাইরাস এবং কম্পিউটারের আক্রান্ত ভাইরাসের মধ্যে পার্থক্য অনেক রয়েছে।
আরো জানুন: কম্পিউটারের জনক কে কেন তাকে জনক বলা হয়
কম্পিউটারে কেন ভাইরাস প্রবেশ করে?
বর্তমান যোগ হচ্ছে ডিজিটাল যুগ। আর এই ডিজিটাল যুগে সকলেরই কম্পিউটার ব্যবহার করার প্রয়োজনীয়তা দিন দিন বেড়েই চলছে। যার ফলে সকল অফিস- আদালত কম্পিউটার বা প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে যাচ্ছে। তারই দ্বারা বাহ্যিকতায় বর্তমানে কিছু দোষ চরিত্রের মানুষও তাদের খারাপ বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে কম্পিউটার তথ্য হাতিয়ে টাকা আয় করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। যার ফলে বহু কম্পিউটার ব্যবহারকারী প্রতিদিন তাদের কম্পিউটারের ক্ষতির মুখে পড়ছে। একটি ভাইরাস কম্পিউটারের ভিতর বিভিন্নভাবে প্রবেশ করতে পারে। যা সেকল উপায়ে প্রবেশ করে তার ফাঁদ পেতে রেখেছে সেই দোষ চরিত্রের মানুষগুলো বা হ্যাকারগুলো। তাদেরকে হ্যাকার বলেই মানুষ বেশি চিনে থাকে। যারা মানুষকে ফাঁদে ফেলে টাকা উপার্জন করে। মূলত তাদের খারাপ চিন্তার ফলেই তারা বিশেষ কিছু প্রক্রিয়ার দ্ধারা কম্পিউটার ভাইরাস প্রবেশ করায়।
কম্পিউটার ভাইরাস কিভাবে সৃষ্টি হলো-
কম্পিউটার ভাইরাসের সৃষ্টি হয়েছে ১৯৪৯ সালের দিকে। সে সময়কার একজন বিজ্ঞানী সর্ব প্রথম কম্পিউটার ভাইরাসের কথা আলোচনায় আনেন। সে সময় সকলের সামনে কম্পিউটার ভাইরাসের পরিচিতি বের হয়, কোন এক প্রোগ্রামের বা ফাইলের সম্পূর্ণ নকল বের করার মাধ্যম থেকে আলোচনা শুরু হয়। এই দ্ধারাবাহী প্রবাহে সৃষ্টি হয় কম্পিউটার ভাইরাসের। যা আগে থেকেই বেশি শক্তিশালী ছিল। যার ফলে আতঙ্কে মানুষ কম্পিউটারের ইন্টারনেট সংযোগ লাগাতে চেতনা। কিন্তু ধীরে ধীরে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে সাধারন মানুষের কম্পিউটার থেকে হ্যাকিং এর ভয় বা ভাইরাস ঢোকার ভয়টি কমে গিয়েছে। এভাবে ১৯৮৯ সাল থেকে ছোট ভাইরাস থেকে বর্তমান সময়ে শক্তিশালী ভাইরাসগুলোর জন্ম হয়েছে।
কম্পিউটার ভাইরাস কিভাবে ক্ষতির কারণ-
কম্পিউটার ভাইরাস হচ্ছে এমন একটি কম্পিউটার জাতীয় রোগ বা ভাইরাস যা কোনভাবে সাধারন সর্দি কাশি ভাইরাসের মতো এতটা সহজ না। কম্পিউটার ভাইরাসের ফলে একজন কম্পিউটার ব্যবহারকারীর প্রচুর ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। যে কম্পিউটার ভাইরাস ঢুকবে সেই কম্পিউটারের সকল তথ্য বা ডেটা চলে যাওয়ার বা ডিলিট হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা সবচেয়ে বেশি। তারই সাথে কম্পিউটার কিছু জরুরি তথ্য থেকেই থাকে যেমন ব্যাংকের তথ্য, বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট এর পাসওয়ার্ড বা অনেক জরুরি কিছু ছবি, ভিডিও বা ডকুমেন্ট যা অন্য
কারর হাতে গেলে ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার সম্ভবনা আছে। এই কারণটি সবচেয়ে বড় ক্ষতির কারণ। যার ফলে একজন বাক্তির গপোনীয়তা রক্ষা নাও হতে পারে। যার ফলে তাকে ভবিষ্যৎ কোন জটিল সমস্যার মধ্যে পরতে হতে পারে। তাই অবশ্যই কম্পিউটার ভাইরাস থেকে নিজের কম্পিউটার এবং নিজেকে সচেতন থাকতে হবে। এর ফলেই কম্পিউটার ভাইরাস প্রতিরোধ করা সম্ভব। তারই সাথে যদি সে হ্যাকারের হাতে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এর গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চলে গেলে সে নিমিষেই আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টটিকে খালি করে দিতে পারবে। তারই সাথে আপনার জরুরি তথ্য অন্য কোথাও বিক্রি করে দিতে পারে। যার ফলে আপনাকে আইনগত সমস্যার মধ্যে পরতে হতে পারে।
কম্পিউটার ভাইরাস কিভাবে কম্পিউটারের ভিতরে প্রবেশ করে-
কম্পিউটার ভাইরাসের প্রবেশ পথ বহু রয়েছে। যেখানে সহজেই কম্পিউটার ভাইরাস একটি কম্পিউটারকে ভাইরাসে আক্রান্ত করে ফেলতে পারে। যার ফলে আপনার কম্পিউটার সকল তথ্য আরেক ব্যাক্তির কাছে পোঁছে যাবে। প্রথমত, ভাইরাস হচ্ছে একটি ফাইল বা প্রোগ্রামিং ফাইল যা হ্যাকাররা কিছু খারাপ চালের দ্ধারা আপনার কম্পিউটার ডাউনলোড করিয়ে নিতে পারে। যার ফলে আপনার কম্পিউটার ভাইরাসটি একটিভ বা চালু হয়ে তার সকল কাজ শুরু করে দেয় কোন বাধা ছাড়াই।
আপনার ব্যবহারকৃত ইন্টারনেট দ্ধারাও কম্পিউটার ভাইরাস আপনার যন্ত্রের ভিতর প্রবেশ করতে পারে। যার ফলে আগেরকার সময়ে মানুষের বাসায় কম্পিউটার থাকলে তারা ইন্টারনেট সংযোগ নিত না ভাইরাসের ভয়ে। তাই কম্পিউটার ভাইরাসের আরেকটি প্রবেশ পথ হচ্ছে ইন্টারনেট লাইন। কিন্তু, বর্তমান আধুনিক যুগে ইন্টারনেট সার্ভিস যারা দিয়ে থাকে তারা নিমিষেই সে সকল ভাইরাসকে নষ্ট করে দিতে পারে ইন্টারনেট থেকে।
যার ফলে এইভাবে প্রবেশ করার পথ ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আরও কিছু প্রবেশ পথের মধ্যে অন্যতম হলো কোন দামি আপ্লিকেশন যা টাকা দিয়ে কিনতে হয় টা বিনামূলে ব্যবহারের জন্য যেকোনো ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করা। সেই ফাইলে কোন প্রকার ভাইরাস থাকলে আপনার সেই কম্পিউটারটি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যাবে।
কম্পিউটার ভাইরাস ঢুকলে কিভাবে বুঝবেন-
কম্পিউটার ভাইরাস আপনার কম্পিউটার বা পিসিকে কি পরিমানের ক্ষতি করতে পারে তা এরই মধ্যে আপনাদের ধারণা হয়ে গেছে। কিন্তু, প্রত্যেক ভাইরাসের মতো কম্পিউটার ভাইরাসের লক্ষণগুলো কি তা জানা জরুরি। কম্পিউটার ভাইরাস চাইলেই আপনার কম্পিউটারকে পুরোপুরি ভাবে নষ্ট বা আচল করে দিতে পারে। যার ফলে আপনার কম্পিউটার কাজ পর্যন্ত করা বন্ধ হয়ে যায়।
আপনি যেভাবে বোঝতে পারেন আপনার কম্পিউটার ভাইরাস ঢুকেছে-
- আপনার কম্পিউটার কাজ করতে গেলে মনে হবে সব কিছু অটো হচ্ছে বা আপনি কিছু ক্লিক না করলেও ক্লিক হচ্ছে। তার ফলে আপনাকে সতর্ক হতে হবে যে ভাইরাস ঢুকতে পারে।
- আপনার কম্পিউটার কাজ করার গতি বা স্পীড কমে আসবে। খুবী ভারি ভারি মনে হবে চালাতে গিয়ে। এক প্রকার লাগ্যি ভাব পাবেন কম্পিউটার চালাতে গিয়ে।
- কম্পিউটার যেকোনো কিছু ডাউনলোড হতে হতে কম্পিউটার কোন আচমকা সমস্যা দেখা দিলে।
- যেকোনো দামি সফটওয়্যার বা পেইড অ্যাপ বিনামূলে কোন ওয়েবসাইট থেকে নামাতে গেলে। আপনার কম্পিউটার ভাইরাস আসার সম্ভবনা অনেক বেশি থাকে।
- অপরিচিত কারর থেকে কোন প্রকার লিংক পেলে তাতে ক্লিক করার দ্ধারা। হয়তো কিছু পরিচিত ব্যাক্তির লিংক এও ভাইরাস থাকতে পারে। তাই লিঙ্কে ক্লিক দেয়ার আগে ভেবে চিনতে দিতে হবে।
- কোন দিবস বা ঈদের আগে কেও যদি কোন গিফট কার্ড পাঠায় তার দ্ধারা আপনার কম্পিউটার ভাইরাস ঢুকে যেতে পারে। তাই এই সময়ে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকাই উত্তম।
- সকল প্রকার সন্দেহজনক অ্যাপ বা সফটওয়ার ব্যবহার থেকে বিরত থাকবেন। কেননা এটির ফলে আপনার মোবাইলে সহজে এক্সেস নেয়া যায়।
কম্পিউটার ভাইরাস থেকে বাঁচার উপায়-
কম্পিউটার ভাইরাস থেকে মূল বাঁচার উপায় হচ্ছে আমাদের দেয়া উপরের ধাপগুলো অক্ষরে অক্ষরে পালন করার দ্ধারা। সকল লিংকে ক্লিক করার সময় সতর্ক থাকা। কোন প্রকার পেইড অ্যাপ ফ্রীতে না নামানো। সকল প্রকার সফটওয়ার ফ্রী যেকোনো ওয়েবসাইট থেকে না ডাউনলোড করার দ্ধারা। বিশ্বস্ত কারর লিংক বাদে ক্লিক না করা। অপরিচিত ব্যাক্তির পাঠানো লিংক এ ক্লিক করা থেকে বিরত থাকা। তারই সাথে কিছু কম্পিউটার ভাইরাস প্রতিরোধী Anti- Virus পাওয়া যায় সেগুলো কিনে ব্যবহার করা। যার ফলে আপনার কম্পিউটার পুরাপুরি ভাবে নিরাপত্ত থাকবে। তারই সাথে Windows Defender আর Fareall চালু রাখা। এভাবেই আপনার কম্পিউটার থাকতে পারে নিরাপদ।
তাই সকল কম্পিউটার ব্যবহারকারী উচিত ভাইরাস থেকে নিজের কম্পিউটার রক্ষা করে কম্পিউটার ব্যবহার করা। নিজেকে এইসব বিষয়ে সচেতন করুন তারই সাথে অন্যকেও সচেতন রাখুন।
কম্পিউটার ভাইরাস কি, কম্পিউটার ভাইরাস কি এর বৈশিষ্ট্য, কম্পিউটার ভাইরাস কিভাবে কাজ, কম্পিউটার ভাইরাস কিভাবে ক্ষতি করে, কম্পিউটার ভাইরাস, কম্পিউটার ভাইরাস কী.
প্রথম কম্পিউটার ভাইরাসের নাম : DEC PDP-10 ,
সফটওয়্যার
Melissa,ILOVEYOU,The Klez Virus,Code Red and Code Red ,Nimda,
MyDoom, Sasser & Netsky,Storm Worm,Cryptolocker .
Pingback: অনলাইন ক্লাস | অনলাইন ক্লাস কিভাবে করবো - Amir info Bangla
parkertools
March 13, 2022 at 6:01 am
Thank you